ফরমান হোসাইনঃ গ্লাস ফাইবারের বিকল্প হিসেবে এবার পাট থেকে তৈরী হবে মোটর বাইকের হেলমেট, গাড়ির বডি, ঢেউটিন, পাইপসহ এরোস্পেসের গুরুত্বপূর্ণ অংশ। পাট থেকে তৈরি হলেও গ্লাস ফাইবারের তৈরী জিনিসপত্রের চেয়ে এগুলো বহুগুণ শক্তিশালী, পরিবেশ বান্ধব এবং দামেও সস্তা । এমনই একটি প্রযুক্তি উদ্ভাবন করেছেন ঢাকা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. ফুরকান সরকার।
পাটকে সোনালী আঁশ বলা হলেও বাংলাদেশে বিভিন্ন কারণে পাটের ব্যবহার কিংবা রপ্তানি ক্রমান্বয়ে কমছে। তবে এই উদ্ভাবনের মাধ্যমে দেশীয় বাজারে তথা বিশ্ববাজারে পাটের চাহিদা বাড়বে। একইসাথে কৃষকরা নিজেদের স্বল্প পুঁজিতে ঘরে বসে মূল্যবান পণ্য উৎপাদন করা সম্ভব হবে ।
সাধারণত পাটের আঁশ নরম, সংকোচনশীল এবং প্যাঁচ যুক্ত হওয়ায় শক্ত ম্যাটেরিয়াল তৈরী করা সম্ভব হয়ে উঠে না। এই পদ্ধতিতে প্রথমে পাটের সাথে রাসায়নিক পদার্থ মিশিয়ে শক্ত শীট তৈরী করা হয়। এরপর সেখান থেকে বিভিন্ন পাটপণ্য তৈরী করা যাবে, যেগুলো অনেক হালকা, দামেও সস্তা। সেই সাথে পরিবেশ বান্ধবও। এ সম্পর্কে ড. ফুরকান সরকার বলেন, একজন কৃষক চাইলে ঘরে বসে স্বল্প বিনিয়োগে উৎপাদিত পাটপণ্য তার চেয়ে ৪-৫ গুন দামে বিক্রি করতে পারবে।
এরোস্পেস ইন্ডাস্ট্রি ,জাহাজ শিল্পে প্রাকৃতিক পলিমারের ব্যবহার দিনদিন ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। স্টিল এবং লোহার চেয়ে অধিক শক্তিশালী এবং হালকা হওয়ায় স্টিল, লোহার বিকল্প হিসেবে এটি ব্যবহার করা যাবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি। এর আগেও পাটের বিভিন্ন পণ্য উৎপাদন হলেও দাম এবং চাহিদার সাথে যুগ উপযোগি না হওয়ায় বেশিদিন ঠিকতে পারেনি। কিন্ত এইবারের উদ্ভাবন বিশ্ববাজারের চাহিদার সাথে বেশ সংগতিপূর্ণ হওয়ায়, দেশীয় এবং বিশ্ববাজারে চাহিদা ব্যাপক হবেও বলে জানান তিনি।
Leave a Reply